Header Ads Widget

ধূমপান নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নতুন সিদ্ধান্ত


 জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষায় সমাজসেবা অধিদপ্তর কার্যালয়কে সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর কার্যালয়ে নারী মৈত্রীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে তামাকমুক্ত ঘোষণা’ শীর্ষক এক সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সভায় জানানো হয়, অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে যেকোনো ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা অনুসরণ করে অধিদপ্তরের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে, যাতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আগত অতিথিরা পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকেন।

সভায় আরও জানানো হয়, ২০০৫ সালের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০১৩) আরও শক্তিশালী করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। 

এর মধ্যে রয়েছে পাবলিক প্লেসে স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন বন্ধ করা, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং মোড়কে সচিত্র সতর্কবার্তা বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ধূমপানের কারণে যে শুধু ধূমপায়ীই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়, বরং পাশে থাকা অধূমপায়ীরাও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সমাজসেব অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আগত অতিথিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দায়বদ্ধ, এই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এই অধিদপ্তরকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে এটি আরো বিস্তৃত আকারে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

নারী মৈত্রীর মাদার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো-এর আহ্বায়ক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব শিবানী ভট্টাচার্য বলেন, তামাকমুক্ত কার্যালয় ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর যে উদাহরণ সৃষ্টি করল, আশা করি দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। এই ধূমপানমুক্ত ঘোষণার মাধ্যমে একটি বড় সামাজিক পরিবর্তনের শুরু হতে পারে। আমরা আশা করি, এটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছড়িয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যতে একটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথকে ত্বরান্বিত করবে।’

নারী মৈত্রীর ইয়ুথ ফোরাম সদস্য তাসফিয়া নওরিন বলেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান রাখা আছে। সেসব স্থান থেকেও অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এই ক্ষতি রোধে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করায় আমি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে আমি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো দ্রুত পাসের দাবি জানাই

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তনুশ্রী হালদারসহ সমাজসেবা অধিপ্তরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা।

Post a Comment

0 Comments