Header Ads Widget

পন্তের বীরত্ব ছাপিয়ে ইংল্যান্ডের বাজবল, চাপে ভারত

 



‎ভাঙা পায়ের চোটে কাবু রিষভ পন্তের সাহসী ফিফটি আর বেন স্টোকসের আট বছর পর টেস্টে প্রথম পাঁচ উইকেট- এই দুই নাটকীয় মুহূর্তে রঙিন হয়েছে ম্যানচেস্টার টেস্টের দ্বিতীয় দিন। তবে দিনের শেষে আলো কেড়ে নিলেন জ্যাক ক্রলি আর বেন ডাকেট। ওপেনিং জুটিতে তাঁদের ১৬৬ রানের তাণ্ডব ভারতকে অনেকটাই চাপে ফেলে দিয়েছে।

‎ভারতের ৩৫৮ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ড তুলেছে ২২৫ রান, উইকেট গেছে মাত্র ২টি। এখনো ১৩৩ রানে পিছিয়ে থাকলেও ব্যাটিং পিচে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ড যেন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। হাতে ৮ উইকেট আর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মিডল অর্ডার- সব মিলিয়ে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ম্যাচটা নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
‎পান্তের ইনজুরি ও ঠাকুর-সুন্দরদের ছোট ছোট ইনিংসের ওপর ভর করে ভারত ৩৫৮ রান করলেও, জবাবে ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল ঝড়ো। ডাকেট আর ক্রলি খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে। টি ব্রেকের আগেই স্কোরবোর্ডে ১০০ রান তুলে ফেলেছিলেন তাঁরা।

‎ডাকেট ৯৪ আর ক্রলি ৮৪ রান করে আউট হন, দুজনেই ইনিংসকে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরিতে রূপ দিত ব্যর্থ হন। যদিও তাঁদের এই জুটি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। দিন শেষে জো রুট (১৫*) আর ওলি পোপ (২০*) ক্রিজে রয়ে গেছেন। দুজনই বেশ কিছুবার বেঁচে গেছেন, কিন্তু স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিতে ভুল করেননি।

‎জয়ের আশায় ইংলিশ শিবির উচ্ছ্বসিত। দিন শেষে সাংবাদিকদের ক্রলি বলেন, "আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি, বিশেষ করে সকালে যেভাবে বল করেছি। আমি নিজের পারফরম্যান্সে সর্বোচ্চ দিতে চাই সব সময়। এই রকম দিনগুলোই কঠিন সময়গুলোকে অর্থবহ করে তোলে।"

‎এদিকে ভারতের ব্যাটিং ইনিংসে আগের দিন এক পাগলাটে রিভার্স স্কুপ খেলতে গিয়ে ইনজুরি পাওয়া পান্তের পায়ে চিড় ধরা পড়ে। সেই পন্তই দ্বিতীয় দিন ৩৭ রানে থাকার সময় সাদা জার্সি গায়ে মাঠে নেমে দাঁড়িয়ে গেলেন ইনিংস টানতে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের স্ট্যান্ডিং ওভেশনও প্রমাণ করে দিল পন্তের ইনিংসটা কতটা স্পেশাল।
‎এক পায়ে দাঁড়িয়ে লাঞ্চ পর্যন্ত ভারতকে টেনে নিয়ে গেলেন, রান তখন ৩২১/৬। এরপর বৃষ্টি বিঘ্নিত দ্বিতীয় সেশনে ৬ বলে একটি ছয় আর চার মেরে ৬৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন পন্ত, টেস্টে এটি তাঁর ১৮তম অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত আর্চারের দুর্দান্ত ইয়র্কারে ৫৪ রানে বোল্ড হলেও ইতিমধ্যেই তিনি গড়েছেন ইংল্যান্ডে উইকেটরক্ষকদের মধ্যে সিরিজে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

‎শার্দুল ঠাকুর বলেন, “ও অনেক ব্যথায় ছিল, কিন্তু ওকে আমরা আগেও অসম্ভব কিছু করতে দেখেছি। আজকের ইনিংসও সেরকমই। এই কন্ডিশনে রান করাটা সহজ ছিল না। ও যা করেছে, সেটা অসাধারণ।”

‎ভারতের ইনিংস শুরু হয়েছিল ২৬৪/৪ থেকে। দিনের শুরুতেই জাদেজা (২০) আউট হন আর্চারের বলে। পরে ঠাকুর (৪১) আর সুন্দর (২৭)-এর ছোট ছোট ইনিংস যোগ করে স্কোরটা টেনে নিয়ে যান। স্টোকস ২০১৭ সালের পর তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পান।

‎শেষ বেলায় রুট-পোপ জুটি ইনিংসটা ধরে রাখে, যদিও দুজনেই কয়েকবার আউট হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। তবু দিন শেষে উইকেট না হারিয়ে ম্যাচটা আগ্রহের জায়গায় রেখে দিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার ম্যানচেস্টারের আকাশ যদি থাকে পরিষ্কার, তাহলে ম্যাচটা জমে উঠবে আরও বেশি। ভারত কি ইংলিশ ব্যাটারদের থামিয়ে লিড নিতে পারবে? নাকি স্বাগতিকরা ছুটবে সিরিজ জয়ের পথে? উত্তরের অপেক্ষায় টেস্টপ্রেমীরা।

Post a Comment

0 Comments