Header Ads Widget

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি'র ইতিহাস।

 


শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি'র ইতিহাস।


পাকিস্তানের রাষ্ট্রকাঠমোর মধ্যে ২৫ বছর ধরে এই অঞ্চলের নাগরিকরা গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। নিয়মিতান্ত্রিক এ লড়াইয়ের বিজয় ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পথে অর্জনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পাক সমরজান্তার হথকারিতা আমাদেরকে ঠেলে দিয়েছিল যুদ্ধের পথে। প্রতিবেশী ভারতের প্রত্যক্ষ সহয়তা নিয়ে সেই যুদ্ধে জিততে হয়েছিল বলে স্বাধীনতার পর আমাদের অর্থনীতি ও সাংস্কৃতির ওপর ভারত আধিপত্যের থাবা বাসায়। শেখ মুজিবের আওয়ামী সরকার সেই থাবা থেকে জনগণের অধিকার ও বাংলাদেশের স্বার্থকে রক্ষা করবাংলাদেশের রাজনীতিতে জিয়াউর রহমানের আগমন অনিবার্য হলেও আকস্মিক এবং অকল্পনীয় ছিল। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে তিনি বাংলাভাষী পাকিস্তানি সৈনিক হিসেবে প্রবল বিক্রম লড়েছিলেন খেমকারান রণাঙ্গনে। স্বদেশ ও শত্রুপক্ষের কাছে তার সেদিনের অবিস্মরণীয় যুদ্ধ বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল।আবার ১৯৭১-এ তিনি এক ঘোর দুঃসময়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল। প্রয়োজনের মুহূর্তে কি করতে হবে; জীবনবাজী রেখে সে সিদ্ধান্ত দ্রুত নেয়ার এক সহজাত ক্ষমতা তাঁকে নেতৃত্বের আসনের দিকে সব সময় ঠেলে দিয়েছে। তাই ১৯৭৫-এর নভেম্বরের উন্মাতাল রাজপথে অভিষেক ঘটে তাঁর রাষ্টতিনি স্বাধীনতার ঘোষক ও যোদ্ধা; আবার সুশৃঙ্খল আইন অনুগত সৈনিক। সিপাহী-জনতার বিপ্লবের অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু তিনি। তার আচমকা তার কাধে অর্পিত হয় এক বিশৃঙ্খল দেশের শাসনভার। তখন সামরিক বাহিনীতে শৃঙ্খল ছিল না উস্কানি ও চক্রান্তে জর্জরিত সশস্ত্র বাহিনীকে তিনি কঠোর পদক্ষেপে সুশৃঙ্খল করলেন। দেশে রাজনীতি ছিল না, জিয়া রাজনৈতিক দলের পুনরুজ্জীবন ঘটালেন। রাজনীতিকদের জারি করা সামরিক শাসন তুলে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কালজয়ী দর্শন উদ্ভাবন করে তিনি জাতিকে উপহার দিলেন পরিচয় ও আদর্শের পতাকা। সময়ের দাবি মেটাতে তিনি সৃষ্টি করলেন নতুন রাজনৈতিঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্ত্বরে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল (বিএনপি)’ নামে এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। বাংলাদেশের রাজনীতিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধমে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে যে শূন্যতার সৃষ্টি করা হয় তা পুরনে ইতিহাসের দাবী, দেশবাসীর আকাংখায় বিএনপির অভ্যুদয় ঘটে। বিএনপির ঘোষণাপত্রে বলা হয় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য, ব্যাপক জনভিত্তিক গণতন্ত্র ও রাজনীতি প্রতিষ্ঠা, এক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত জনগণের অক্লান্ত প্রয়াসের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক মুক্তি, আত্মনির্ভরশীলতা ও প্রগতি অর্জন এবং সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ অধিপত্যবাদের বিভীষিকা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপি গঠিত হয়েছে। ১১ সদস্যের স্থায়ী কমিটি, পার্লামেন্টারি বোর্ড ও দলীয় ইলেক্টোরাল কলেজ নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ৫ জন সহ-সভাপতি, ১ জন সাধারণ সম্পাদক, ১ জন কোষাধ্যক্ষ, ৪ জন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১ জন করে প্রচার, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, দপ্তর, যুব, মহিলা, ছাত্র, শ্রম ও কৃষি আন্তর্জাতিক বিষয়ক ও বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক পদ রাখা হয়। দলের প্রথম কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে অবস্থিত।বিএনপির প্রথম সরকার গঠন ১৯৭৮-এর ৩০ নভেম্বর সরকার ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবিতে দু’দফায় পিছিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে এই প্রথম সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি ২০৭টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং ৩৯ টি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ (মালেক) প্রধান বিরোধী দল হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়া বলেন, বিএনপির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা।’ মালয়েশিয়ার ‘বিজনেস টাইমস’ লেখে, ‘অতীতে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত করেছিল যে মহাপ্লাবনী সমস্যাগুলো প্রেসিডেন্ট জিয়া কার্যত সেগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।’ এসময় নিউইয়র্ক টাইমসের বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং স্বনির্ভরতা অর্জন এবং উৎপাদন দ্বিগুণ করার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট জিয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়।‘৮০ সালেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থানান্তরিত করা হয় নয়াপল্টনে। ‘১৯৮১-র ২৯ মে প্রেসিডেন্ট জিয়া চট্টগ্রাম সফরে গেলে ৩০ মে ভোরে সার্কিট হাউজে কিছু বিপদগামী সেনাসদস্য তাকে হত্যা করে। তবে নানা পদক্ষেপে ও কর্মকাণ্ডে জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশের ইতিহাস হয়ে উঠেছে অভিন্ন। ব্যক্তিগত সততা, উন্নয়ন, ঐক্য এবং সুসম্পর্কের রাজনৈতিক দর্শণের কারণে রাজনীতির ইতিহাসে তার নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।

Post a Comment

0 Comments